জনৈক তপন কুমার ধর (৫৮) একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। ১নং আসামী জনৈক তপন কুমার ধরের নিকট কল করে তার আত্মীয় হয় মর্মে মোবাইলে পরিচয় দেয়। পরিচয় দিয়ে ব্যক্তিগত বিভিন্ন বিষয়ে কথাবার্তা বলার একপযার্য়ে তিনি নিজেকে স্বর্ণের ব্যবসায়ী বলিলে ১নং আসামী তাহাকে এক জোড়া কানের দুল বানিয়ে দেওয়ার জন্য বাসায় যাওয়ার কথা বলে।
সন্ধ্যা অনুমান ০৭.০০ ঘটিকার সময় কোতোয়ালী থানাধীন ১৬নং বদরপাতি লেইন শাহবাগ মার্কেট, সালাউদ্দিন বিল্ডিং ৪র্থ তলা কানের দুলের অর্ডার নেওয়ার জন্য বর্ণনা মতে ১নং আসামীর বাসায় যান। উক্ত স্থানে ১নং আসামীর সাথে ২ ও ৩নং আসামীদ্বয়ও উপস্থিত ছিল। তিনি ১নং আসামীর সাথে প্রথম দেখা হওয়ায় তাকে আত্মীয়তার বিষয়ে জানতে চাইলে আসামীদের কথাবার্তা সন্দেহজনক হওয়ায় তিনি ঘটনাস্থল হইতে অনুমান ১০/১৫ মিনিট পরে চলে আসতে চাইলে আসামীরা তাকে বাসার একটি কক্ষের মধ্যে অবরোধ করে পরনের শার্ট ও গেঞ্জি খোলার জন্য বলে।
একপযার্য়ে ১নং আসামী জোর করে ২ ও ৩নং আসামীদ্বয়ের মাধ্যমে জনৈক তপন কুমার ধর (৫৮) এর পরনের শার্ট ও গেঞ্জি খুলে জোর পূর্বক ১নং আসামীর সাথে অশ্লীল ছবি তুলে ৫০,০০০দ/-টাকা দাবী করে। অন্যথায় উক্ত ছবি গুলো ফেইসবুক সহ বিভিন্ন জায়গায় অনলাইনে ছেড়ে দিবে বলে হুমকী ধমকী প্রদান করিতে থাকে।
আসামীদের দাবীকৃত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করিলে মুত্যর ভয় দেখাইয়া সকল আসামীরা একই উদ্দেশ্যে তাহার গলায় থাকা লকেট সহ ২ভরি ৭ আনা ওজনের স্বর্ণের গলার চেইন ও পাথর সহ ১৪আনা ওজনের স্বর্ণের আংটি সহ সর্বমোট ওজন ৩ভরি ৫আনা, মুল্য ১,৯০,০০০/-(এক লক্ষ নব্বই হাজার) টাকা ও শার্টের পকেটে থাকা নগদ ১৫০০/-টাকা জোর পূর্বক নিয়া নেয়। তিনি কোন রকমে আসামীদের কবল হতে রক্ষা পেয়ে বাসায় এসে ঘটনার ব্যাপারে আত্মীয় স্বজনদের নিকট বলে।
পরবতর্ীতে জেল রোডের মুখে থাকা অভিযান ডিউটিরত এএসআই/জয়নাল আবেদীন, এএসআই/রুবেল বড়–য়া সহ সঙ্গীয় ফোর্সদেরকে দেখতে পেয়ে জনৈক তপন কুমার ধর (৫৮) তাদের নিকট গিয়ে ঘটনার ব্যাপারে বলে।
পুলিশ ঘটনার কথা শুনে বিষয়টি ধর্তব্য মনে হওয়ায় তাৎক্ষনিক অভিযান পরিচালনা করে জনৈক তপন কুমার ধর (৫৮) এর সনাক্তমতে ১নং আসামীকে গ্রেফতার ও তাহার হেফাজত হইতে জোর পূর্বক নেওয়া স্বর্ণালংকার গুলো উদ্ধার করে পুলিশ জব্দ করেন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ১নং আসামী তাহার নাম ঠিকানা প্রকাশ সহ ২নং ও ৩নং আসামী ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরবতর্ীতে ১নং আসামীর স্বীকারোক্তি মতে ২নং ও ৩নং আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।
২ ও ৩নং আসামীদ্বয়কে গ্রেফতারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তাহাদের নাম ঠিকানা প্রকাশ সহ ঘটনার কথা স্বীকার করে। জনৈক তপন কুমার ধর বাদী হয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দায়ের করলে দঃ বিঃ আইনের ৩৪২/৩৮৫/৩৮৬/৩৪ ধারায় ০১টি মামলা রুজু হয়।
আসামীরা প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা বিভিন্ন দোকান মালিক ও স্বর্ণ ব্যবসায়ীদেরকে টার্গেট করে। টার্গেটকৃত ব্যক্তির মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে মহিলা সদস্য কল দিয়ে টার্গেটকৃত ব্যক্তির সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে এবং সুমধুর কন্ঠে কথা বলিতে থাকে।
একপর্যায়ে টার্গেটকৃত ব্যক্তি মহিলার কথায় পটে গেলে তাকে স্বর্ণ তৈরী করার নামে বাসায় ডেকে এনে তার সাথে কথা বলা শুরু করে। কথা বলার একপর্যায়ে ব্যবসায়ীর সাথে অশোভন আচরন করে তার সাথে নগ্ন ছবি তুলে উক্ত নগ্ন ছবি দিয়ে ফেসবুক সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিবে বলে ব্ল্যাকমেইল করে চাঁদা দাবী করে। চাঁদা না দিলে মারধর করে। পরিশেষে চাঁদা আদায় শেষ হলে ছেড়ে দেয়।অভিযান পরিচালানা অফিসারদের নাম ও পদবী : এএসআই/জয়নাল আবেদীন, এএসআই/রুবেল বড়–য়া ও সঙ্গীয় ফোর্স, সর্ব কোতোয়ালী থানা, সিএমপি, চট্টগ্রাম।
গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম ও ঠিকানা :
০১) পম্পি বনিক(২১), পিতা সনজিৎ বনিক, মাতা মনি বনিক, সাং শোলাকান্দি, থানা নবী নগর, জেলা বি বাড়ীয়া, বর্তমানে শাহবাগ মার্কেট, সালাউদ্দিন বিল্ডিং ৪র্থ তলা, ১৬নং বদরপাতি লেইন, থানা কোতোয়ালী, জেলা চট্টগ্রাম।
০২) বিকাশ রায়(১৯), পিতা সোনাই রায়, মাতা অনিমা রায়, সাং বড়ইছড়ি, কয়লার ডিপো, চুনার ভাটি, থানা কাপ্তাই, জেলা রাঙ্গামাটি, বর্তমানে বানিয়াপট্টি, বকশির হাট, মা বিল্ডিং এর পাশের্ব, থানা কোতোয়ালী, জেলা চট্টগ্রাম।
০৩) রাজেশ দাশ(১৯), পিতা মৃত রাজীব দাশ, মাতা দিপালী দাশ, সাং গোয়ালিয়া মান্দা, গান্ধীর বাড়ী, ৪নং ওয়ার্ড, থানা লৌহজং, জেলা মুন্সিগঞ্জ, বর্তমানে এনায়েত বাজার, গোয়ালপাড়া বাজারের পাশের্ব, থানা কোতোয়ালী, জেলা চট্টগ্রাম।